চট্টগ্রাম ব্যুরো
নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে কলেজ পড়ুয়া ভাগনি আরজু আক্তার (২০) কে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে গেছে নাজিম উদ্দিন নামে খালাতো মামা। ঘটনাটি দেখে ফেলায় এ সময় আরজু আক্তারের বৃদ্ধ নানা-নানীকেও গলা কেটে জখম করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ এপৃল) দিবাগত গভীর রাতে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গাছবাড়িয়া নয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আরজু আক্তার ওই উপজেলার কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের কাঞ্চননগর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে।
তার নানা আব্দুল হাকিম (৭০) ও নানী ফরিদা আক্তার (৬০)। তারা দুজন গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁদের বাড়ি চন্দনাইশ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ গাছবাড়িয়া নয়াপাড়া এলাকায়।
ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়া যুবক নাজিম উদ্দিন (২৮) সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া গ্রামের মৃত ছৈয়দ আহমেদের ছেলে। বুধবার (৯ ্এপৃল) বিকেলে ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করেছেন চন্দনাইশ থানার ওসি মো. নুরুজ্জামান।
তিনি বলেন, নাজিম উদ্দিন নিহত আরজু আক্তারের মায়ের খালাতো ভাই। আমরা যতটুকু তথ্য পেয়েছি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আরজুকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নাজিম। তাকে বাঁচাতে এলে নানীকে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। নানীর চিৎকারে নানা এলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে নাজিম। এরপর নাজিম তার খালা ফরিদা আক্তারের মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।
কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিহত তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিংবা ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে, এটা ¯পষ্ট। কী হয়েছে, সেটা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বোঝা যাবে। তরুণীকে মুখের ভেতর ওড়না ঢুকিয়ে শ্বাসরোধে মৃত অবস্থায় আমরা পেয়েছি।
নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ থানায় নিয়ে এসেছে। সুরতহাল স¤পন্ন হয়েছে। আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে বলে জানান ওসি নুরুজ্জামান।
ওসি আরও জানান, গুরুতর আহত নানা-নানীকে প্রথমে চন্দনাইশ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। তারা এখন সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নানা আব্দুল হাকিমের বরাত দিয়ে তার প্রতিবেশি স্থানীয় মো. মনজুরুল আলম জানান, আব্দুল হাকিমের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। তিন ছেলে বিদেশে থাকেন। ঘটনার আগে গত বৃহস্পতিবার আরজু আক্তার সেখানে বেড়াতে যান। ঘটনার দিন নাজিম উদ্দিনও সেখানে বেড়াতে যান।
ঘটনার সময় পাকা ঘরের দ্বিতীয় তলায় তিন ছেলের পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। আর নিচতলায় আব্দুল হাকিম, ফরিদা, আরজু ও নাজিম ছিলেন। গভীর রাতে আরজু আক্তার বাথরুমে যান। নাজিমও সুযোগ বুঝে বাথরুমে প্রবেশ করেন। সেখানে আরজু আক্তারকে ধর্ষণ করেন। আরজু আক্তার চিৎকার শুরু করলে তাকে মুখে ওড়না ঢুকিয়ে দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে ঘটনা দেখে ফেলায় খালা ফরিদা আক্তারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গলা কেটে জখম করে। তাদের বাচাতে এগিয়ে গেলে নানাকেও গলা কেটে গুরুতর আহত করে।
এ ঘটনায় নিহত আরজুর পিতা আনোয়ার হোসেন ঘাতক নাজিমের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের দাবি জানিয়েছেন।