Jaijaidin

ছোট সাজ্জাদের অনুসারীদের গুলিতে আহত ঢাকাইয়া আকবর

Shah Alam Soulav
4 Min Read

চট্টগ্রাম ব্যুরো

কারাগারে আটক শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের অনুসারীদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী আলী আকবর ওরফে ঢাকাইয়া আকবর। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সৈকতের চা দোকানি নারীর এক শিশু ও বেড়াতে আসা এক দর্শনার্থী।

শুক্রবার (২৩ মে) দিনগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের পশ্চিম পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঢাকাইয়া আকবরসহ গুলিবিদ্ধ তিনজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

সিএমপির বন্দর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) সোহেল পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর সৈকতে হঠাৎ গুলির আওয়াজ। এতে ঢাকাইয়া আকবর নামে এক যুবক, একজন দর্শনার্থী ও এক শিশু গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আকবরের শরীরে ৩-৪টি গুলি লেগেছে। তাদের তাৎক্ষণিকভাবে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এই হামলা পরিকল্পিত। তবে হামলাকারী কারা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হামলাকারীদের পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। হামলার ধরন দেখে আমরা বলছি, এটি সন্ত্রাসী চক্রেরই কাজ। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যমতে, হামলার পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের অপরাধী দ্বন্দ্ব। চট্টগ্রামের অপরাধ জগতে পরিচিত নাম ছোট সাজ্জাদ বর্তমানে কারাবন্দি। তাকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিয়েছে ঢাকাইয়া আকবর। সেই প্রতিশোধের অংশ হিসেবেই এই সশস্ত্র হামলা হতে পারে।

স্থানীয় একটি সূত্রেরও দাবি, শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের অনুসারীরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হামলা চালিয়েছে। ঘটনার পর সৈকতে ঘুরতে আসা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

পতেঙ্গা সৈকতের ব্যবসায়ী নুরুচ্ছাফা তালুকদার জানান, ‘ঢাকাইয়া আকবর, একজন নারী এবং অন্য চারজন ছেলেসহ মোট ৬ জন ২৮ নম্বর দোকানে বসেছিলেন। দোকানের এক ছেলে তারা কী অর্ডার করবেন জিজ্ঞেস করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোটরসাইকেলে করে চারজন যুবক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তাদের মধ্যে একজন আকবর নামে ওই যুবককে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। এ সময় আকবর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

ওই ব্যবসায়ী আরো বলেন, আকবরের সাথে থাকা চারজন ছেলে ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালায়। আর নারী যিনি ছিলেন তিনি গুলিবর্ষণকারীদের সাথে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় চা দোকানি নারীর ছেলে ও একজন দর্শনার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের নাম জানা যায়নি। তবে সৈকতে বেড়াতে যাওয়া ওই পথচারী ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কো¤পানিতে চাকরি করেন বলে জানায় পুলিশ।

সূত্র বলছে, কারাবন্দি ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে ঢাকাইয়া আকবরের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। সাজ্জাদকে ঢাকা থেকে পুলিশে দেওয়ার পেছনেও ঢাকাইয়া আকবরের হাত রয়েছে এমন ধারণা সাজ্জাদের। সেই ক্ষোভ থেকেই আকবরকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়েছে। যদিও পুলিশ এখনো হামলাকারী কারা সেই বিষয়ে ¯পষ্ট করতে পারেনি।

প্রসঙ্গত, শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ এবং ঢাকাইয়া আকবর বিদেশে পালানো দুর্ধর্ষ ক্যাডার সাজ্জাদ হোসেন খান প্রকাশ বড় সাজ্জাদের অনুসারী ছিলেন। তার নামে নগরের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি গুলি কিংবা পেট্রোলবোমা ছুড়ে মারতেন।

২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সাজ্জাদের ভাই ওসমান আলীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে ব্যর্থ হয়ে তার বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে আকবরের বিরুদ্ধে। এরপর থেকে ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে তার বিরোধ শুরু হয়। একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি লক্ষীপুর থেকে গ্রেপ্তার হন এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জামিনে মুক্তি পান।

আর ছোট সাজ্জাদকে রাজধানীর একটি শপিংমল থেকে গত ১৫ মার্চ রাতে পুলিশে দেওয়া হয়। ১০ মে রাতে নগরের চান্দগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাকেও।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *