বিশেষ প্রতিনিধি
ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস এর উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, স্টারলিংক কে স্বাধীনভাবে ব্যবসা করার সুযোগ ও রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর দিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে নিরাপত্তাহীন করবেন না।
তিনি বলেন, আমাদের দ্রুত গতির ইন্টারনেট দরকার তবে দেশ বিক্রি করে নয়। স্টার লিংকে এদেশের কোন সরকারি কোম্পানির মাধ্যমে ব্যবসা করতে দিন। তাহলে দেশে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে রাখাইন পরিস্থিতি: মানবিক করিডোর এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি শীর্ষক এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা দেখা দিয়েছে। এই দুর্যোগের ঘন ঘটার জন্য যারা দায়ী তারা হচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, আমরা বর্তমান সরকারকে সমর্থন করেছি এবং করি। কিন্তু এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে যা বাংলাদেশের জনগণ এবং সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে তুলতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা শুনলাম ড. মো. ইউনুস এর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাখাইন রাজ্যগুলি মানবিক করিডর দিচ্ছে। এই মানবিক করিডর কি? মানবিক করিডর টা হচ্ছে যখন পাশের রাজ্যে পাশের দেশে গৃহযুদ্ধ, রক্তারক্তি হয় তখন সে দেশের সাধারণ জনগণকে নিরগমের জন্য রাস্তা করে দেওয়া হয়। এই ধরনের ঘটনা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখেছি। কিন্তু একটি করিডরও রক্তারক্তি ছাড়া মুক্তি পায়নি। সমস্ত মানবিক করিডোর অমানবিক অবস্থায় পতিত হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের যে মানবিক করিডোর দেয়া হচ্ছে এটা বাংলাদেশের জনগণ ও সার্বভৌমত্বের জন্য সুখকর নয়।
ড. মোহাম্মদ ইউনুস এর উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, তখন সব ছাত্ররা মিলে আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। এখন কিন্তু সব ছাত্ররা আপনার পক্ষে নেই। ছাত্রদের একটা অংশ আপনার পাশে আছে। বাকিরা যার যার দলে চলে গেছে। বিএনপি’র ছাত্ররা ছাত্রদলে ফিরেছে। জামাতের ছাত্ররা ছাত্রশিবিরে ফিরেছে। বাম দলের ছাত্ররা বাম দলের ছাত্র সংগঠনগুলোতে ফিরেছে। সুতরাং ছাত্রদের শুধু একটা অংশ আপনার পাশে আছে। তবে জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আমরা আপনাকে সমর্থন করি।
ড. ইউনূস এর উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, আপনি চাইলে দেশের জন্য অনেক ভালো কিছু করতে পারেন। কিন্তু আপনার ভুলের কারণে দেশের জনগণ বিপদে পড়তে পারে। আপনি তো মুখ মুছে বিদেশে চলে যাবেন। যেসব যাদেরকে বিদেশ থেকে নিয়ে এসে উপদেষ্টা বানিয়েছেন তারাও বিদেশে চলে যাবে। বাংলাদেশের সাধারণ জনগনের বাংলাদেশে থাকতে হবে। আমাদের দেশে থাকতে হবে। এই সাধারণ জনগণের দেশে থাকা টা অনিরাপদ করবেন না। আমাদেরকে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ফেলে দিবেন না।
সরকারের উদ্দেশ্যে রিপন বলেন,স্টারলিং বাংলাদেশে আনতে চাচ্ছেন ভালো কথা। কিন্তু বাংলাদেশে কোনো কোম্পানির মাধ্যমে আনতে হবে। সরকারি কোম্পানির টেলিটক আছে তাদের মাধ্যমে আনতে পারে। ড. মো. ইউনুস এর গ্রামীণফোন আছে তাদের মাধ্যমে আনতে পারেন। কিন্তু সরাসরি স্টার লিংকে এদেশে আনতে দেওয়া যাবে না। আমাদের দ্রুত গতির ইন্টারনেট দরকার তবে দেশ বিক্রি করে নয়। স্টারলিংক সরাসরি ব্যবসা করলে এ দেশ থেকে কোন তথ্য নিয়ে যাবে, কোথায় কোন উস্কানি দিবে এটা কিন্তু আমরা জানি না। তাই স্টারলিংক এ এককভাবে ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। তাই চুক্তি সংশোধন করুন।
দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন এর সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকন, জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকনসহ সংগঠনটির নেতৃবৃন্দরা।