যাযাদি ডেস্ক
দাবি পূরণের আশ্বাসে কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করতে যাচ্ছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
রোববার (২৫ মে) সন্ধ্যায় সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য ও এনবিআরের এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রেস রিলিজ দিচ্ছি আমরা। সরকার আমাদের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সব সংশোধন করার কথা বলেছে। আমরা কাজে যোগ দিচ্ছি।
জাগো নিউজকে ওই কর্মকর্তা বলেন, কিছুক্ষণ আগে অর্থমন্ত্রণালয় একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছে। এনবিআরকে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান করা ও অধ্যাদেশ সংশোধন করার বিষয়ে বলা হয়েছে।
অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কলমবিরতি কর্মসূচি পালন শুরু করেন এনবিআর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরারা। এরপর একই দাবিতে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্যরা। প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেওয়া হয় স্মারকলিপি।
একই দাবিতে ২৪ ও ২৫ মে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এছাড়া আগামীকাল সোমবার সারাদেশে কর্মবিরতির পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী পণ্য আমদানি-রপ্তানি এবং আন্তর্জাতিক যাত্রী সেবা এই কর্মসূচির আওতার বাইরে রাখা হয়।
আজ রোববার সন্ধ্যায় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এতে এনবিআরের বেশিরভাগ দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের সই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাস্তবায়ন বিষয়ে ২২ মে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি প্রেসনোট জারি করে। যাতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সরকার আশা করেছিল যে, অধ্যাদেশের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর এবং কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব উদ্বেগের অবসান ঘটবে। কিন্তু এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সাম্প্রতিক প্রেস রিলিজ থেকে এ বিষয়ে কিছু অস্পষ্টতা রয়ে গেছে মর্মে প্রতীয়মান হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। বিসিএস (শুল্ক ও আবগারী) ও বিসিএস (কর) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালীকরণ এবং একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠনের মাধ্যমে রাজস্ব নীতি পৃথকীকরণের কাঠামো কিরূপে প্রণীত হবে- তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালীকরণ এবং রাজস্ব নীতি প্রণয়ন কার্যক্রম পৃথকীকরণের লক্ষ্যে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সব সংশোধনী আনা হবে। প্রয়োজনীয় সংশোধনের আগে জারি করা অধ্যাদেশ কার্যকর করা হবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার আশা প্রকাশ করছে যে, এই ঘোষণার মাধ্যমে কর এবং কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব উদ্বেগের অবসান ঘটবে। দেশের রাজস্ব আহরণ ও রাজস্ব সেবা প্রদানকারী সব দপ্তর অবিলম্বে পূর্ণ উদ্যমে কাজ শুরু করবে।