Jaijaidin

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ

Shah Alam Soulav
3 Min Read

যাযাদি ডেস্ক

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনকে ‘ধর্মবিদ্বেষী ও ইসলামবিরোধী’ আখ্যায়িত করে অবিলম্বে এটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে দলের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের এই দাবি জানান।

মহাসচিব বলেন, কিছু উচ্ছিষ্টভোগী নাস্তিক ও পশ্চিমা দালালদের দিয়ে এই কমিশন গঠন করা হয়েছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের ধর্মীয় ও পারিবারিক কাঠামোকে ধ্বংস করা।

তিনি আরও বলেন, নারীর অধিকার নিশ্চিত করার নামে তারা আসলে ইসলামী মূল্যবোধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অভিন্ন পারিবারিক আইন, বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার এবং ভরণপোষণের ক্ষেত্রে সব ধর্মের নারীর জন্য এক আইন চালুর প্রস্তাব সরাসরি কোরআন-সুন্নাহর পরিপন্থী এবং মুসলমানদের বিশ্বাসের ওপর নগ্ন আঘাত। এ ধরনের ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।

ড. কাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই দেশে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ মুসলমান। তাদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি কোনো প্রকার শ্রদ্ধা না রেখেই কমিশন যৌনকর্মীদের পেশাগত স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। এটি শুধু ইসলামবিরোধী নয়, বরং সমাজে অবাধ যৌনতা ও নৈতিক অবক্ষয় ছড়ানোর একটি সুদূরপ্রসারী কৌশল। যৌনকর্মীদের আইনি স্বীকৃতি দেওয়া মানে এই পেশাকে উৎসাহিত করা, যা কোনো ধর্মপ্রাণ দেশের নাগরিক মেনে নিতে পারে না।

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এই এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হলে দেশের প্রতিটি পরিবারে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে এবং সমাজে সংঘাত ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে সরকারকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে—এই কমিশন বাতিল করা না হলে দেশের ধর্মপ্রাণ জনতা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।

সমাবেশে ড. আবদুল কাদের ভারতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

দলের অন্যান্য নেতারা বলেন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন একটি বিশেষ মতাদর্শের প্রতিফলন। এর বেশ কিছু প্রস্তাব সরাসরি পবিত্র কুরআনের বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।

তারা আরও বলেন, এই প্রস্তাবনা বাংলাদেশের মুসলিম নারী সমাজের বাস্তবতা ও স্বকীয়তার সাথে সম্পূর্ণভাবে সম্পর্কহীন এবং এটি ইসলাম ও মুসলিম পরিচয়ের ওপর একটি সুপরিকল্পিত আঘাত। এই প্রস্তাবগুলো দেশের ধর্মীয় ভারসাম্য ও পারিবারিক কাঠামো ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

নেতারা আরও অভিযোগ করেন, কমিশনের সদস্যরা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান এবং তারা নারীদের প্রকৃত অর্থে প্রতিনিধিত্ব করেন না। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন অবিলম্বে বাতিল এবং এর বিতর্কিত প্রস্তাবগুলো প্রত্যাখ্যানের জোর দাবি জানান।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলটির নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক আবদুল জলিল ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান প্রমুখ।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *