Jaijaidin

রোজা শুরুর আগেই হঠাৎ দ্বিগুণ তিন পণ্যের দাম

Shah Alam Soulav
5 Min Read

যাযাদিপ্র ডেস্ক

শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ বেগুনি, শসা ও লেবু। চাহিদা বিবেচনায় এই তিনটি পণ্যের দাম বিক্রেতারা ইচ্ছামতো বাড়াচ্ছেন। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও দ্বিগুণের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে লেবু।

তবে বাড়তি চাহিদা তৈরি হলেও এবার অনেকটাই স্থিতিশীল ছোলা, খেজুর, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন ও চিনির দর। আবার বাজারে বাড়তি সরবরাহের কারণে ছোলা, চিনিসহ কয়েকটি ভোগ্যপণ্যের দাম এরই মধ্যে কমেছে। তবে এবারও রোজা ঘিরে বাড়তি মাংসের বাজার। এখনো কাটেনি ভোজ্য তেলের সংকট।

হঠাৎ দ্বিগুণ রোজার কয়েক পণ্যের দাম গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার, বাড্ডা ও রামপুরা বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য মিলেছে। মানভেদে বেগুন কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো। শসা কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে লেবুর।

এক মাস আগেও লেবুর হালি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দ্বিগুণের বেশি দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। উন্নতজাতের লেবুর হালি ১০০ টাকা হালিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

রাজধানীর বাড্ডার সবজি বিক্রেতা মাহাদী হাসান বলেন, ‘এখন লেবুর অফ সিজন। তাই পাইকারি বাজারেই লেবুর কিছুটা সংকট রয়েছে। শীত মৌসুম শেষ হওয়ার কারণে বেগুনের সরবরাহও কিছুটা কমে যাওয়ায় দামও বেড়ে গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রোজা উপলক্ষে সব ধরনের মাংসের দাম বেড়েছে। কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ব্রয়লার মুরগি কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি কেজি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায় এবং খাসির মাংস কেজি এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজারের জিহাদ ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা মো. বায়োজিদ বলেন, ‘রোজায় বাড়তি চাহিদার কারণে খামারি পর্যায়েই মুরগির দাম বাড়তি। যার কারণে খুচরা পর্যায়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।’

রোজা ঘিরে পর্যাপ্ত আমদানি হলেও গত নভেম্বর থেকে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। হাতে গোনা দু-একটি দোকানে বোতলজাত তেল পাওয়া গেলেও সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি রাখা হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল সংকটে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেলও। ভোজ্য তেলের সরবরাহ সংকটের কারণে ভোক্তারা উদ্বিগ্ন।

বাড্ডা বাজারের মেসার্স সিয়াম স্টোরে বোতলজাত তেল কিনতে আসেন রেহানা পারভীন নামের এক গৃহিণী। দোকানদার মুখের ওপরই বলে দেন, ‘তেল নেই আপা’। এই গৃহিণী বলেন, ‘বাজারের এই দোকান ছাড়াও আরো দুটি মুদি দোকান ঘুরেও তেল পাইনি। দু-এক দিন পরই রোজা শুরু হচ্ছে। বাজারে তেলের সংকট কি সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা দেখছেন না। অন্যান্য পণ্যের তো কোনো সংকট দেখছি না, তাহলে তেলের এত সংকট কেন? রেহেনা পারভীন আরো বলেন, দুই মাস ধরে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে তেল নেই, এখন বাজারের দোকানগুলোতেও তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু দোকানে খোলা তেল পাওয়া যাচ্ছে, দাম বোতলের চেয়ে বেশি।

মেসার্স সিয়াম স্টোরের বিক্রয়কর্মী মোশারফ হোসেন বলেন, ‘কোনো কম্পানিই তেল দিচ্ছে না। অনলাইনে অর্ডার করে পাঁচ লিটারের দু-একটি বোতল গায়ের দরে এনে কাছের কাস্টমারগুলোকে দিচ্ছি। ডিলাররাও আমাদের কাছে ভিড়ছে না, জানতে চাইলে তারা আমাদের বলে তেল নেই, তেল এলে পাবেন। অগ্রিম কোনো অর্ডার ও পেমেন্টও নিচ্ছে না তারা।’

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ কেজি ৪৫ টাকায়, ছোলা কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকায়, বেসন কেজি মানভেদে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, চিনি কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়, আলু কেজি ২০ টাকায়, দেশি আদা কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, দেশি নতুন রসুন ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়, আমদানি করা রসুন কেজি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে শীতকালীন সবজির সরবরাহ কিছুটা কমে যাওয়ায় কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। টমেটো কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, মুলা কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শিম মানভেদে ৩০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৩০ থেকে ৫০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *