Jaijaidin

সচিবালয়ে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা কর্মবিরতি, নতুন কর্মসূচিও আসছে

Shah Alam Soulav
4 Min Read

যাযাদি ডেস্ক

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম ঘোষণা দিয়েছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হবে।

বুধবার (২৮ মে) দুপুরে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে নিজ কার্যালয়ে এই ঘোষণা দেন ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর।

এ সময় বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান মো. নরুল ইসলাম ও প্রধান সমন্বয়ক মো. নজরুল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ জারিতে সৃষ্ট সংকট নিয়ে ৭ সচিবের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছে।

বাদিউল কবীর বলেন, আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। ৩১ মে প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরবেন। এর মধ্যে দুইজন উপদেষ্টা ও তিনজন সচিবের কাছে স্মারকলিপি দেব। কর্মবিরতির পাশাপাশি এই স্মারকলিপি প্রদানও আমাদের কর্মসূচির অংশ। ৩১ মের পরে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এর মধ্যে ভালো কোনো ফলাফল না পেলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সেটা মাঠপর্যায়ে হবে, না কি অবস্থান কর্মসূচি হিসেবে, তা পরে জানানো হবে। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আজ সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ জারিতে সৃষ্ট সংকট নিয়ে গঠিত ৭ সচিবের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তাদের আলোচনায় আমাদের মনে হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আমাদের জন্য ইতিবাচক কিছু এনে দিতে পারবেন। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই আমাদের কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে।

কো-চেয়ারম্যান বলেন, দেশে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। কিছুদিন পরেই কোরবানির ঈদ ও বাজেট ঘোষণা হবে। এজন্য কর্মচারীরা যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ না হন, সে জন্য সবদিক বিবেচনা করে আগামী দিনগুলোতে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একই সঙ্গে জরুরি সেবার কথা বিবেচনায় রেখে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি চলবে। মাঠপর্যায়ে সব দপ্তর, পরিদপ্তর, অধিদপ্তর, সংস্থা এবং ডিসি অফিস, বিভাগীয় অফিসগুলোতেও প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এবং পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

সারা বাংলাদেশে জরুরি সেবা যেমন বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, হাসপাতালে যারা রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন, তাদের কাছে অনুরোধ থাকবে—আপনারা যত কম সময়ের মধ্যে কর্মবিরতি পালন করতে পারেন, সে সিদ্ধান্ত আপনারাই নেবেন। তবে আমাদের প্রস্তাব থাকবে ৩০ মিনিটের বেশি নয়। সম্ভব হলে আরও কম সময়ের মধ্যে কর্মবিরতি পালন করে সাধারণ মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

বাদিউল কবীর আরও বলেন, এই সময়ের মধ্যে উপদেষ্টাদের সঙ্গে আমাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে স্মারকলিপি প্রদানসহ যোগাযোগ চালিয়ে যাবো। প্রধান উপদেষ্টা আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান মো. নরুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের যে বিধিমালা আছে, সেখানে আমাদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শৃঙ্খলার মধ্যে রাখতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে সব বিধি-বিধান আছে। কিন্তু চাকরি থেকে অপসারণ মানে কী? আমাকে বিনা নোটিশে যেকোনো আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে শূন্য হাতে এখান থেকে চলে যেতে হবে? আগে তো ছিল, আমি যদি কোনো অপরাধ করে থাকি তাহলে কর্তৃপক্ষ আমাকে শোকজ করবে, বিভাগীয় মামলা করবে, একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করবে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমাকে শুনানির সুযোগ দেবে। সেখানে যদি কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট না হন, তখন শাস্তির ব্যবস্থা করবে।

তিনি আরও বলেন, আগের বিধিতে কিন্তু অপসারণের কথা লেখা নেই। তাহলে এটা কি আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে? আমরা কারও প্রতিপক্ষ নই। আজকের বৈঠকে ভালো-মন্দ কোনো অগ্রগতি নেই। প্রধান উপদেষ্টা আসা পর্যন্ত আমাদের শান্ত থাকতে হবে। এ সময়ের মধ্যে ভালো কোনো ফলাফল না পেলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সেখান থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নেই।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *