Jaijaidin

সম্পত্তির অধিকার ফিরে পেতে নিপীড়িত রেমিটেন্সযোদ্ধার সংবাদ সম্মেলন

Shah Alam Soulav
10 Min Read

যাযাদিপ্র ডেস্ক

বাবার সম্পত্তির অধিকার ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মোহাম্মদ পারভেজ মাসুম।

ভুক্তভোগী এ প্রবাসীর সংবাদ সম্মেলনের বিশেষ অংশটুকো হুবহু তুলে ধরা হলো –

আমি একজন বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে আমি প্রবাসে বসবাস করছি। আমি ১৯৯৬ ইং সালে  উচ্চ শিক্ষার জন্যে বিদেশে চলে যাই এবং বর্তমানে আমি ও আমার ৩ সন্তান সহ অস্ট্রেলিয়াতে বাস করছি।

বাংলাদেশে আমার মত প্রবাসীদের কোনও আইনী সহযোগীতা নেই ঘুষ ছাড়া। আমার বাবার মৃত্যুর ১৭ বছর পরেও আমার উপর মিথ্যা মামলা, মেরে ফেলার চেষ্টা, মৃত বাবার সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ ও বঞ্চিত, পাগল প্রমান করার চেষ্টা করে রিহ্যাবে ঢুকানোর চেষ্টা, যার উপযুক্ত তথ্য প্রমান থাকার পরও বাংলাদেশের পুলিশ (মিরপুর মডেল থানা) কোনরুপ সাহায্য করেনি আমাকে। এর কারণ হলো আমার বড় ভাই পারভেজ আনোয়ার রিপন ও ছোট ভাই শিমুল তৎকালীন হাসিনা সরকারের আমলাতন্ত্রকে ঘুষ দিয়েছিলেন এবং এখনও তারা তাই করে যাচ্ছেন।

আমার বাবা এ, কে, এম, ফজলুল হক ২০০৭ ইং সালে হঠাৎ ব্রেন স্ট্রোক করে মৃত্যুর পর রেখে যান তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ, যার হিসাব আমি ২০১২ ইং সাল হইতে চেয়ে এসেছি আমার দুই ভাই এর কাছ থেকে। কিন্তু তারা আমাকে তার সঠিক হিসাব আজও দেন নাই। বহুবার এ বিষয়ে এলাকার সমাজ কল্যাণের গণ্যমান্য ব্যক্তি, কাউন্সিলর, আমার একটি জি ডি’র তদন্ত অফিসার এস এই আজিজুল হক, ডি বি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিট এর এ ডি সি নাজমুল ইসলাম দ্বারা বসার পরও তারা তা অগ্রাহ্য করে হানাহানির পর্যায়ে নিয়ে যায় এবং আমাকে বারবার অমিমাংসিত ফলাফল নিয়েই দুঃখ ভাড়াকান্ত হৃদয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরত যেতে হয়।

২০২৩ ইং সালের ৯ ই মার্চ আমি ঢাকা আসার পর আমার ২ ভাই আমাদের ৭৫ বয়সোর্ধ মা’কে প্ররোচিত করে আমার বিরুদ্ধে পাড়ার সমাজ কল্যাণ সমিতিতে উল্টো একটি মিথ্যা বিচার দেয়। সেখানে সমাজ কল্যাণের তৎকালীন সভাপতি নেসার উদ্দীন জোরপূর্বক ভাবে সাদা কাগজে আমার স্বাক্ষর নিবার চেষ্টা করেন, কিন্তু আমি রাজি না হলে পরবর্তীতে আমার ছোট ভাই পারভেজ শফিকুল আজম শিমুল ও তার সহযোগী যিনি একজন ড্রাইভার ও শিমুলের ভাড়াটিয়া আমাকে মেরে রক্তাক্ত করে এবং আমার গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টা করে। উল্লেখ্য, আমার ছোট ভাই শিমুল সম্পত্তি ভোগ দখলের সুবিধার্থে আমাদের বাসার নিচ তলায় কিছু তথাকথিত তাবলীগ জামাতের লেভাসধারী যুবকদের পালতেন যাহাদের কে ব্যবহার করানো হয় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে সাক্ষী হিসেবে।

এ বিষয়ে ২০২৩ ইং সালে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণসহ মিরপুর মডেল থানার তৎকালীন ওসি মহসীন বরাবর ২ টি অভিযোগ ও ২ টি জি ডি এবং জঅই ৪ (চার) এর কার্যালয়ে ২ টি লিখিত অভিযোগ করেও কোনরূপ সহযোগিতা পাইনি ঘুষ না দেয়ার কারণে। উপরোন্ত পুলিশ ঘুষ খেয়ে সঠিক তথ্য প্রমান ছাড়াই আমার ছোট ভাই ও তার স্ত্রী দ্বারা (FIR২০৯, ধারা ৩২৩/৫০৬, নন-জি-আর-৬৯৭/২৩) দুইটি মিথ্যা জি ডি’র কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই আমাকে পুরোপুরি অজ্ঞাত রেখে এস আই শফিকুল ইসলামের (পি পি এম, মিরপুর মডেল থানা) তত্ত্বাবধানে ২ টি ওয়ারেন্ট তৈরী করে ২০২৩ ইং সালের ৩১ শে অক্টোবর রাত ১২:৫০ মিনিটে আমার মিরপুর ১ এর বাসা থেকে সিভিল ড্রেসে পুলিশ (এস আই ফারুক, এস আই. সাইফুল) আমার বাসায় এসে বলেন আমি আমার বাসায় অজ্ঞাতনামা এক সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছি। অত:পর পুলিশ মিথ্যা কথা বলে আমার বাসায় ঢুকে আমাকে এরেস্ট করেন ও আমার ২ টি মোবাইল নিয়ে যান। পরবর্তীতে আমি জামিনে ছাড়া পেয়ে আমার মোবাইল ২ টি ফেরত নিতে গেলে এস আই ফারুক এবং এস আই সাইফুল আমাকে আইন বহির্ভুত ভাবে এরেস্ট করার ভিডিও গুলো জোরপূর্বক ডিলিট করান ও মুচলেকা নেন যাতে আমি ভিডিওগুলো কোন গণমাধ্যমে পোষ্ট না করি।

এই মামলা গুলোতে সাক্ষী প্রদানকারী ব্যাক্তিরা আমার ছোট ভাই এর পালিত তাবলীগ জামাতের লেবাসধারী ব্যাচেলর ভাড়াটিয়া, যাদের মধ্যে একজন (নজরুল ইসলাম) আমাকে ২ বার গলাটিপে প্রাণ নাশের চেষ্টা করে আমার ছোট ভাই শিমুলের নির্দেশে যাতে আমি ভয় পেয়ে অস্ট্রেলিয়া ফেরত চলে যাই।

এছাড়াও আমার বড় ভাই পারভেজ আনোয়ার রিপন ও ছোট ভাই পারভেজ শফিকুল আজম শিমুল আমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, পুলিশ, প্রতিবেশী ও সমাজের কাছে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দেয়। তারা ছড়ায় আমি  পাগল হয়ে গেছি। এসব বলে আমার পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে, কারণ আমাদের সমাজে পাগল সম্পত্তির ভাগ পায় না। ইতিপূর্বে আমার দুই ভাই আমাকে ত্যাজ্যপুত্র খেতাব দিতে চেয়ে ব্যর্থ হয় কারণ বাংলাদেশের আইনে এমন কিছু নেই। আমার ২ ভাই আমার মা’কে ব্যবহার করে আমার স্ত্রী’র কাছ হইতে স্বাক্ষর নেবার চেষ্টা করেছে বহুবার যাতে করে তারা আমাকে রিহাব এ ভর্তি করতে পারে মানসিক রোগী হিসাবে এবং আমাকে চিরতরে পাগল বানানোর জন্যে।

এর মীমাংসার স্বার্থে আমি গত ২৭/৭/২০২৩ ইং তারিখে আমার উকিল দ্বারা আমার পৈতৃক সম্পত্তির হিসাব চেয়ে একটি উকিল নোটিশ পাঠানো হলেও আমার ২ ভাই তাহা অগ্রাহ্য করে।

গত ৫ ই আগষ্ট ২০২৪ ইং বাংলাদেশ আবার পুনরায় স্বাধীন হয়েছে ভেবে আমি গত বছর ডিসেম্বরে আবার বাংলাদেশে আসি ন্যায় বিচারের আশায়। এবার আমি আবারো আমার ২ ভাই এর কাছে আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির সুষম বন্টনের আশায় আমি নিজে ও আমার আত্মীয় স্বজনের দ্বারা প্রস্তাব দেই। দুঃখের বিষয় তারা আমার সহিত কোনরকম সহযোগিতা না করে আবারও আমাকে হুমকি ধামকি, এয়ারপোর্টে আসলে জামাই আদর, পুলিশ দিয়ে সাহেস্থা ও রিহাবে ভর্তির হুমকি দেয় এবং আমার অসুস্থ ওয়াইফ কে ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে আবার মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে আমার ওয়াইফ অস্ট্রেলিয়া ফেরত যাইবার ঠিক ১ দিন আগে মিরপুর মডেল থানায়।

এর পরিপেক্ষিতে মিরপুর মডেল থানার এস আই দেলোয়ার হোসাইন আমার সহিত কোনরূপ যোগাযোগ না করিয়া আমার বন্ধুদের কাছে আমার বিরুদ্ধে করা আমার ওয়াইফের অভিযোগের বিষয়বস্তূ নিয়ে আলোচনা করে আমার মানহানি করেন বন্ধু মহলে। এবং আমি তাহার সহিত অতিসত্বর যোগাযোগ না করিলে আমার বিরুদ্ধে কোর্টে পধংব করবেন বলে হুমকি দেন।

আমি কতিপয় এস আই দেলোয়ার এর সহিত যোগাযোগ করিলে তিনি আবারো আমার বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন।

আমি যেহেতু মিরপুর মডেল থানা থেকে এ পর্যন্ত কোন প্রকার সহযোগিতা পাইনি, সেহেতু আমি কোর্টে একটি মামলা দায়ের করি আমার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে এবং মামলাটি বর্তমানে ডি বি তে তদন্ত চলমান অবস্থায় আছে। আমি ডি আই জি আওলাদ হোসাইন এর সহিত গত ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ইং তারিখে যোগাযোগ করি এবং পুলিশের ঘুষ চওয়া ও অসযোগীতার কথা তাকে অবগতি করি। ডি আই জি জনাব এ কে এম আওলাদ হোসাইন মিরপুর তাহার জুরিস ডিকশেন এর বাহিরে থাকায় মিরপুর মডেল থানার ডি সি’র সহিত যোগাযোগ করতে বলেন।

আমি ডি সি মিরপুর মডেল থানায় যোগাযোগ করিলে উনি আমাকে ও সি মিরপুর মডেল থানায় যোগাযোগ করতে বলেন এবং আমার কথা শুনতে ও জি ডি গ্রহণ করতে ও সি মিরপুর মডেল থানা কে নির্দেশ দেন।

আমি সেই দিনই মিরপুর মডেল থানায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ও সি জনাব সাজ্জাদ রুমন এর নিকট পুলিশের এস আই দেলোয়ার ও হাবিব এবং আমার ২ ভাই ও অন্যানদের নিপীড়ন ও মানহানির কথা উল্লেখ করি প্রমান সহকারে এবং একটি লিখিত অভিযোগ ইমেইল ও হোয়াটস্যাপ এর মাদ্ধমে পাঠিয়ে তার কাছে জি ডি করার অনুরোধ করি। দুঃখের বিষয় ও সি সাজ্জাদ রুমন সাহেবও আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আমার জি ডি নেওয়ার বিষয়ে কোনোরূপ সহযোগিতা করছেন না।

আমি আরও উল্লেখ করতে চাই ২০২৩ ইং তারিখে আমি যেই ২টি জি ডি করেছিলাম আমার দুই ভাই ও তাদের সন্ত্রাসী সহযোগীদের বিরুদ্ধে সেই জি ডি’র তদন্ত অফিসার ছিলেন এস আই শফিকুল ইসলাম ও এস আই আজিজুল হক। এস আই শফিকুল ইসলাম আমার জি ডি’র কোনরূপ তদন্ত করেননি, উল্টো আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ২ টি ওয়ারেন্ট বাহির করিয়া আমাকে এরেস্ট করান। এস আই আজিজুল হক আমাকে তাকে ডোনেসন বা ঘুষ দিতে বলেন ও আমাকে মিথ্যা স্বাক্ষী যোগাড় করে আমার ভাইদের বিরুদ্ধে মামলা দার করিয়ে দিবেন বলেন। আমি তার এই কুপ্রস্তাব সম্পূর্ণরূপে অগ্রাহ্য করি কারণ ইহা আমার নীতির বহির্ভূত।

আজ আমি মর্মাহত কারণ প্রশাসন আগের মতোই আমাকে উপেক্ষা করেছে কতিপয় দুর্নীতিবাজ ও ঘুষখোর পুলিশ, আমার আপন বড় ও ছোট ভাই এবং কিছু আত্মীয়স্বজন এর বিরুদ্ধে জি ডি/সাধারণ ডায়রী নিতে উপযুক্ত তথ্য প্রমান আমার কাছে থাকা সত্ত্বেও।

আমাকে বলা হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ফেরত চলে যেতে কারণ দেশে নাকি আমাদের মতন প্রবাসীদের জন্যে কোন আইন নাই।

আমার প্রশ্ন, এজন্যেই কি আমরা প্রবাসীরা রেমিটেন্স বন্ধ করে খুনী ও ফ্যাসীবাদ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম ৫ ই অগাস্ট এ?

আমরা প্রবাসীদের কি শুধু দেশের জন্যে রেমিটেন্স ও ফ্রী কাজ করে দেশকে বিপদ মুক্ত করে যাবো নিজেদের কষ্টে উপার্জিত হালাল ডলার ও জীবনের বিনিময়ে?

আমরা কি ঘুষ ছাড়া বাংলাদেশের পুলিশ এর কাছ হইতে একটু সুবিচার আশা করতে পারিনা?

আমাদের কি পৈতৃক সম্পত্তি ভোগ করার অধিকার হারিয়ে ফেলেছি?

প্রশ্নগুলো আমি আপনাদের মতন বিচক্ষণ সাংবাদিকদের বিবেচনার জন্যে রেখে গেলাম।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *