যাযাদি ডেস্ক
ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জান খান কামাল পলাতক। কারাগারে বন্দি তার ‘ক্যাশিয়ার’ হিসেবে পরিচিত মোশাররফ হোসেন ওরফে মিনতি মোশাররফ। গত ১৭ এপ্রিল তাকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। মোশাররফ জেলে বন্দি থাকলেও এখনো সক্রিয় তার অনুসারিরা। বিশেষ করে কারওয়ান বাজার এলাকার বেশিরভাগ স্পট এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তার। এসব স্পটের অবৈধ চাঁদা মোশাররফই পৌঁছে দিতেন আসাদুজ্জামান কামালের রাজাবাজারের বাসায়। এমনই অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেখানের ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, রাজধানীর সবচেয়ে বৃহত্তম পাইকারি আড়ত কাওরান বাজার এখনও চাঁদাবাজদের অভয়ারণ্য। মাসে কয়েক কোটি টাকার চাঁদা তোলা হয় শুধু এই আড়তটি ঘিরে।
জানা গেছে, টাকার বিনিময়ে সিটি করপোরেশনের পার্কিং স্পটগুলোও এখন নিয়ন্ত্রণ করছে চক্রটি। সিটি করপোরেশন নামমাত্র টাকা পেলেও বাকি সব চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রকদের হাতে। মোশাররফ গত ১৬ বছরে কারওয়ান বাজার আড়ৎ থেকে প্রায় ২শ’ কোটি টাকা চাঁদা তুলে এর একটি অংশ দিয়েছেন কামালকে। তেজগাঁও সরকারি ও সিটি করপোরেশনের জায়গা দখল করে গড়ে তোলেন একটি তথাকথিত ক্লাব যেখানে তিনি ক্যাসিনো ব্যবসা করতেন।
তৎকালীন ক্যাসিনোর ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের অনেকেই গ্রেপ্তার হলেও মোশারফের কোনো কিছু হয়নি তখন। কারণ এই ব্যবসার একটি অংশ চলে যেত তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের অফিসে, একটি অংশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস মনির ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ফান্ডে।
গত ৫ই আগস্ট দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পরে সবাই পালিয়েছেন। কিন্তু মোশারফ এখনও জেলে বসে তার কিছু চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী দিয়ে কারওয়ান বাজারের মাসোয়ারাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। একটি আড়তে শেয়ার দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক মোশারফ ও তার সহযোগীরা। মোশারফ কুলির কাজ করতেন। তাই তার নাম ছিল মিনতি মোশাররফ। পরে তিনি তথাকথিত তরুণ লীগ নামে একটি সংগঠন করেন । এই সংগঠনের সভাপতি দাবি করতেন তিনি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন হওয়ার পরে তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগে যোগদান করেন। সেখান থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বদৌলতে তেজগাঁ থানা আওয়ামী লীগের যুব ক্রীড়া সম্পাদকের পদটি ভাগিয়ে নেন। কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তেজগাঁও থানার ওসি ও পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রদের উপর গুলি বর্ষন করেছিলেন। তাই সাধারণ মৎস্য আড়ৎদারদের দাবি এই ব্যবসায়ী নামধারী চাঁদাবাজদের হাত থেকে কারওয়ানবাজাকে চাঁদাবাজ মুক্ত দেখতে চাই। ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, মোশারফ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে দিলীপ, কামাল, কালাম আজাদ, জাকির হোসেন,মোহাম্মদ নজরুল আলম খান ও মিজানুর রহমান পাটোয়ারী অন্যতম। দিলীপ কুমার গ্রেফতার হলেও বাকিরা রয়েছেন অধরা।