বিশেষ প্রতিনিধি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা আশা করি, এগুলা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য হয়তো, আগামী দিনের গণতন্ত্রের পথে বাধা হয়ে দাড়াতে পারে এই জন্য কেউ কেউ হয়তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে পারেন। বিশেষ করে এর মধ্যে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কোন হস্তক্ষেপ আছে কি না সেটিও আমরা জানার চেষ্টা করবো’।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের ভবিষ্যত’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িসহ সারাদেশে গতকাল রাত থেকে চলা আক্রমণ বিষয়ে তিনি বলেন, গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে সেটি এখনো চলমান। সেটি এখনো শেষ হয়নি। এটি কারা করেছেন এই তথ্য আমাদের কাছে নেই, এতে সরকারের কি ভূমিকা ছিলো সে তথ্যও আমাদের কাছে নেই। সুতরাং আর অল্প কিছু সময় আমরা অপেক্ষা করবো, আজকের দিনের মধ্যেই আশা করি সব কিছু পরিষ্কার হবে। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কারা এর জন্য দায়ী, তখন সকল পূর্নাঙ্গ তথ্য পেলে আমরা এই সম্পর্কে বিএনপির পক্ষ থেকে মনোভাব মিডিয়ার সামনে জনগণের সামনে প্রকাশিত করবো। অপূর্নাঙ্গ তথ্য নিয়ে মন্তব্য করার সুযোগ নেই।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কুক্ষাত ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ বিএনপি ও ছাত্রদের আন্দোলনকে দমন করার জন্য পেশী শক্তির বারংবার ব্যবহার করেছেন। আমাদের স্মরণ শক্তি অনেক কম, অনেকে ভুলে গেছেন, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায়, টঙ্গীর পাশেই কিভাবে ১৫ জন সাধারণ মানুষ হত্যা করে ভ্যানে শুইয়ে রেখে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কল্পনা করা যায়? তারা আপনারা আমার ভাই, সন্তান। রাজপথে ন্যায্য দাবি করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় সাহায্যে জ্বালিয়ে দেয়া আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা এর অবসান চাই। অবসান হতে পারে একমাত্র গণতন্ত্রের মাধ্যমে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আজকে নানা ধরণের সংস্কারকে পূর্ব শর্ত দেয়া হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়। সংবিধান সংস্কারের কথা বলেছেন, একটি গ্রুপ বলেছেন ৭২ এর সংবিধান কে ছুড়ে ফেলা হবে। অনেক রক্তের বিনিময়ে জিয়াউর রহমান এবং ছাত্র জনতার মিলিত সংগ্রামের ফলে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। ৭২ এর সংবিধান একটি চমতকার সংবিধান। এটি আওয়ামী লীগের সংবিধান নয়, এটি জনতার সংবিধান। আওয়ামী লীগ কাটাছেঁড়া করে এর অঙ্গহানি ঘটিয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও সংবিধানে সংযোজন করা যায়। কিন্তু যায় হউক, নতুন করে সংবিধান লেখা হউক বা সংশোধন করা হউক এইব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে দেশের সাধারণ জনগণ।
কোন বুদ্ধিজীবী, কারো কোন গুরু, বিদেশ থেকে আগত কোন কোন বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে বাংলাদেশের সংবিধান নতুন করে লেখা বা সংশোধন করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সংবিধান সংযোজন বা সংশোধন একমাত্র অধিকার রাখে স্বাধীন পার্লামেন্ট। নিরপেক্ষভাবে একটি পার্লামেন্ট। যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে আমরা এখনো তা পুরোপুরি দেখিনি, আমরা এই সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিএনপি সর্বোচ্চ পর্যায়ে মনোভাব জানাবে।
স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, এড সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল , তাঁতি দলের যুগ্ন আহবায়ক মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।