Jaijaidin

বাজারে এখন অস্বস্তি শুধু চালের দামে

Shah Alam Soulav
4 Min Read

যাযাদিপ্র ডেস্ক

 

পবিত্র রমজানে অধিকাংশ পণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকলেও চালের দাম বেশি। এরমধ্যে রোজা শুরুর পরও বাজারে কিছু কিছু চালের দাম কেজিপ্রতি দুই থেকে চার টাকা বেড়েছে।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে এখন অস্বস্তি শুধু চালের দামে। এখন রাজধানীর বাজারে ভালোমানের সরু চাল কিনতে প্রতি কেজিতে দাম দিতে হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। মাঝারি চালের দাম ৭০ থেকে ৭৬ টাকা আর মোটা চাল কিনতে ৫৮ থেকে ৬২ টাকা দিতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষকে।

চালের খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে তিনদফা চালের দাম বেড়েছে। সবকিছু হিসাবে নিলে কেজিপ্রতি প্রায় ৮ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে। এরমধ্যে শুধু একদফা দুই-এক টাকা কমেছিল।

রামপুরা ভাই ভাই স্টোরের জামাল হোসেন বলেন, শেষ গত এক সপ্তাহে আবারও চালের দাম কেজিপ্রতি দুই টাকা বেড়েছে। রশিদ, উৎসব ডায়মন্ড, মোজাম্মেল ইত্যাদি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের সরু মিনিকেট চালের ২৫ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা বেড়েছে। এই চাল ৮৬ থেকে ৮৮ টাকা কেজি পড়ছে।

তিনি বলেন, আসলে ৮০ টাকার নিচে কোনো ভালো মানের চাল পাওয়া যায় না। আর বড় বড় ব্র্যান্ডের মিনিকেটের দাম আরও বেশি, ৯০ থেকে ৯২ টাকার আশপাশে। ফলে মধ্যম আয়ের মানুষকে ৮০ টাকা কেজি চাল কিনতে হচ্ছে।

মোটা চালের দামও কম নয়। রামপুরাসহ হাজীপাড়া মালিবাগ মৌচাকবাজার ঘুরে অবশ্য ৫৮ টাকার নিচে কোনো মোটা সেদ্ধ চাল পাওয়া যায়নি। মোটামুটি ভালোমানের মোটা চাল কিনতে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা দিতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষকে। একসঙ্গে বেশি পরিমাণে নিলে দু-এক টাকা কম পাওয়া যায়।

অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও চালের দাম নিয়ে উস্মা প্রকাশ করে হাফিজ উদ্দিন নামের একজন ক্রেতা বলেন, এবার রোজায় বাজারে সবকিছুই ভালো ছিল। শুধু যদি চালের দাম কমতো, তাহলে মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারতো।

এদিকে বাজারে অন্যান্য পণ্যের দাম আগের মতো স্থিতিশীল দেখা গেছে, কিছু পণ্যের দাম নিম্নমুখীও আছে। রোজার শুরুতে সয়াবিন তেলের যে সরবরাহ সংকট ছিল তাও এখন কমেছে। সব দোকানে খোলা সয়াবিনের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কোথাও কোথাও বোতলজাত তেলের সরবরাহে এখনো কিছুটা ঘাটতি দেখা গেছে।

রামপুরা বাজারে চঞ্চল ট্রেডার্সের বেলাল হোসেন বলেন, খোলা সয়াবিন আছে। বোতলজাত তেলও এখন দিচ্ছে কোম্পানিগুলো। তবে চাহিদার তুলনায় কম। আগে যে তেল পাওয়াই যাচ্ছিল না, তেমন আর নেই।

লেবু, শসা ও বেগুনের মতো বাড়তি চাহিদার পণ্যগুলোর দাম কমছে। আগে বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। লেবুর হালি ৪০ টাকা ও শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া অন্যান্য সবজির বাজার আগের মতো নীরব। উচ্ছে আর ঢেঁড়স ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দর কমেছে। প্রতি কেজি উচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ এবং ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

গত বছর উত্তাপ ছড়ানো পেঁয়াজেরও ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। খুচরা পর্যায়ে দেশি ভালোমানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪৫ টাকা। যেখানে গত বছর এ সময় বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হয়েছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। একইভাবে আলুর দাম অর্ধেক কমে এখন ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মোটাদাগে বলতে গেলে এ বছর পবিত্র রমজানে বেশ স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে মুদিপণ্যের দাম। রোজা শুরুর আগেই বাজারে যে অরাজকতা এবার দেখা যায়নি। এ বছর এখন পর্যন্ত চিনি, খেজুর, ডালের দাম কম রয়েছে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *