Jaijaidin

প্রধান উপদেষ্টার মামলা প্রত্যাহার হলে লক্ষ লক্ষ মানুষেরটা কেন হচ্ছে না, প্রশ্ন রিজভীর

Shah Alam Soulav
4 Min Read

বিশেষ প্রতিনিধি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমরা শুনেছি প্রধান উপদেষ্টার সব মামলা প্রত্যাহার হয়ে গেছে। উনিও শেখ হাসিনার ঈর্ষা, বিদ্বেষ এবং আক্রোশের শিকার হয়েছেন। আমরাও আন্দোলন সংগ্রামে থেকেছি, নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হয়েছি। দুই একজন উপদেষ্টারাও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তাদের মামলা যদি প্রত্যাহার হয়ে থাকে তাহলে এই লক্ষ লক্ষ মানু্‌ষেরটা কেন হচ্ছে না?

শনিবার (২৬ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘ফ্যাসিবাদের মিথ্যা মামলায় ৬০ লাখ আসামি, মুক্তি কতদূর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা মাদক সম্রাজ্ঞীদের এমপি বানাতেন, গড ফাদার ও মাদক কারবারিই ছিলেন হাসিনার কাছে বেশি সম্মানিত। আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী এস আলম, সালমান এফ রহমানসহ যারা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ, তাদের টাকা পাচারের গল্প সিন্দাবাদের গল্পকে হার মানিয়ে নতুন রূপকথার গল্প বাংলাদেশের মানুষ শুনেছে। গল্পটি রূপকথার মতো হলেও এটি অত্যন্ত সত্য ও বাস্তব ঘটনা।

যেখানে আমেরিকানরা ফ্লাট কিনতে সাহস পায় না সেখানে শেখ হাসিনার এমপি মন্ত্রীরা ফ্ল্যাট কিনেছে জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ পরিবারের টিউলিপ সিদ্দিকও এখান থেকে মুক্ত নয়, তিনি আবার লন্ডনের এমপি ছিলেন। শেখ হাসিনা তো নিজেই গর্ব করে বলতেন, তার পিয়ন নাকি বাড়িতে হেলিকপ্টার ছাড়া যায় না, সে নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক। তার ঘনিষ্ঠ এস আলম তার বাড়ির কাজের লোক দিয়ে একটি ব্যাংকের শাখা থেকে ২ হাজারের কোটির বেশি টাকা লোন তুলেছেন। শেখ হাসিনা দেশ থেকে জনগণের টাকা লুট করে পুঞ্জীভূত করে পাচার করেছেন। কিছু টাকা দেশে আছে, যেটি বিভিন্ন অপকর্ম করতে ব্যবহার হচ্ছে, আমরা দেখতে পাচ্ছি।

ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, পহেলা বৈশাখে আনন্দ শোভাযাত্রা করতে গিয়ে যে প্রতীকগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল, আন্দোলনের সেই ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি ব্যবহারের কারণে শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের গ্রামের বাড়ি আগুনে ভস্মীভূত করে দেওয়া হয়েছে। পতিত ফ্যাসিবাদ তার অধপতনের পরেও পাচার করা টাকার যে জোরে তারা যেমন হুমকি দিচ্ছে তেমনি নানাবিধ কাজ করে বেড়াচ্ছে।

রিজভী বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদ সরকার বিতাড়িত হওয়ার পরেও তার পাছার করা টাকার যে জোর এই জোরের বলে যেমন হুমকি দিচ্ছে তেমনি নানা ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে ৬০ লক্ষ মামলা দিয়েছে এই কারণে যে তিনি তার লোক দিয়ে ব্যাংক দখল করবে আর কেউ যাতে এর প্রতিবাদ না করতে পারে। তার জন্য এই মিথ্যা মামলারগুলো দিয়েছে। শুধু তাই নয় বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে খুন করেছে, গুম করেছে। তার ফ্যাসিবাদের লেলিহান শিখা জ্বালিয়ে রাখার জন্য এগুলো করেছে। জুলুমের এক বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মোটামুটি ৮ মাস হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা যে নির্বাচনকে কলঙ্কিত করে অদৃশ্য করার চেষ্টা করেছে সেই জায়গা থেকে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করবে ডক্টর ইউনূস এর কাছে এটাই জনগণের প্রত্যাশা।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, নির্বাচন নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে কেন মানুষের হৃদয়কে দোলাচ্ছেন? পেন্ডুলামের মধ্যে ডিসেম্বর না জুন এর মধ্যে দোল খাচ্ছে কেন? এটা স্পষ্ট করেন।

তিনি বলেন, আমাদের নেতা কর্মীদের নামে ৬০ লক্ষ মামলা দিন দিন আমি জানিনা এ মামলা প্রত্যাহার হয়েছে কিনা। প্রায় উকিল ফোন দেয় দেখা করার জন্যে। আমাদেরকে দিনের পর দিন মাসের পর মাস কোর্টের বারান্দায় লেফট রাইট করতে হয়েছে। যত ধরনের অপমান আমাদের কে করেছে। আমরা খুন করে মারামারি করি নাই যে আমাদের নামে মামলা হবে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। শেখ হাসিনার জজ ম্যাজিস্ট্রেটরা আমাদের মিথ্যা মামলায় বিভিন্নভাবে অত্যাচার অপমান করেছে।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক সৈয়দ আবদাল আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজীজুল বারী হেলাল, নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *