Jaijaidin

ডিসেম্বরে বার্ষিকের পর বৃত্তি পরীক্ষা, বাড়ছে টাকার পরিমাণ

Shah Alam Soulav
3 Min Read

যাযাদি ডেস্ক

দীর্ঘ ১৬ বছর পর আবার আগের নিয়মে চালু হতে যাচ্ছে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। এ বছর থেকেই ডিসেম্বরের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে পৃথকভাবে এই বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি ট্যালেন্টপুল ও সাধারণ—দুই ধরনের বৃত্তির অর্থ বাড়ানোর পাশাপাশি বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা প্রচলনের পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পঞ্চম শ্রেণির পৃথক বৃত্তি পরীক্ষা।

তবে সেই নিয়ম আবার ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডিসেম্বর মাসে বার্ষিক পরীক্ষা শেষেই বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালার খসড়া এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান কালের কণ্ঠকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আগের মতো বৃত্তি পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। খসড়া নীতিমালা নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হবে। এরপর নীতিমালা চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে।’
বর্তমানে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা মাসে ৩০০ টাকা এবং সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্তরা ২২৫ টাকা করে পায়।

নতুন নীতিমালার খসড়ায় উভয় ক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ যৌক্তিক হারে বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮২ হাজার ৫০০ থেকে বাড়িয়ে এক লাখ করার প্রস্তাবও করা হয়েছে।

এ ছাড়া এখন পর্যন্ত প্রতিটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মোট শিক্ষার্থীর ২০ শতাংশকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে। এই হার বাড়ানো যায় কি না, তা নিয়েও বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ সালে পিইসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
২০২২ সালে এসে এই পরীক্ষা স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়। পিইসি পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ হয়ে যায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবর্তিত প্রাথমিক বৃত্তিও। তবে ২০২২ সালের শেষ দিকে হঠাৎ বৃত্তি পরীক্ষা চালুর ঘোষণা দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ সিদ্ধান্তকে ঘিরে তখন শিক্ষাবিদদের পক্ষ থেকে নানা সমালোচনা ও আপত্তি ওঠে। বিশেষজ্ঞরা বৃত্তি পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও তৎকালীন প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে।

ঘোষণার পর ওই বছরই অনুষ্ঠিত হয় প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। তবে ফল প্রকাশে দেখা দেয় বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা। ফলাফল প্রকাশের পর তাতে নানা ভুল ধরা পড়ে, ফলে ফল স্থগিত করতে হয়। পরে সংশোধন করে নতুন করে ফল প্রকাশ করা হয়। ২০২৩ সালেও বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, তবে শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

বর্তমানে আবার নতুন করে বৃত্তি পরীক্ষা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘প্রাথমিকে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছে। বৃত্তিও আমরা চালু করতে যাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, সর্বশেষ বৃত্তিতে ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী ট্যালেন্টপুল এবং ৪৯ হাজার ৩৮৩ জন সাধারণ বৃত্তি পেয়েছিল। উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডভিত্তিক কোটা পদ্ধতিতে এই বৃত্তি দেওয়া হয়। সর্বশেষ প্রতিটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মোট শিক্ষার্থীর ২০ শতাংশকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *