Jaijaidin

একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতগবেষক মুস্তাফা জামান আব্বাসীর জীবনাবসান

Shah Alam Soulav
2 Min Read

যাযাদি ডেস্ক

একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখক ড. মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

শনিবার (১০ মে) ভোরে রাজধানীর বনানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে সংগীতশিল্পী শারমিনী আব্বাসী।

গত কয়েকদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। সর্বশেষ শুক্রবার (৯ মে) শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরদিন শনিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

মুস্তাফা জামান আব্বাসী উপমহাদেশের খ্যাতনামা সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৩৬ সালের ৮ ডিসেম্বর ভারতের কোচবিহার জেলার বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা ছিলেন পল্লীগীতির কিংবদন্তি শিল্পী আব্বাস উদ্দীন আহমেদ, যিনি এদেশের লোকসংগীতকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেন।

সংগীতনির্ভর পারিবারিক পরিমণ্ডলেই তার বেড়ে ওঠা। চাচা আব্দুল করিম ছিলেন জনপ্রিয় ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালি গানের শিল্পী। বড় ভাই বিচারপতি মোস্তফা কামাল ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও বিশিষ্ট আইনবিদ। ভাতিজি নাশিদ কামাল এবং ছোট বোন ফেরদৌসী রহমান দুজনেই দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী হিসেবে সমাদৃত।

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় তিনি ফোক মিউজিক রিসার্চ গ্রুপের পরিচালক ও সংগৃহীত গান সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন। তার সংগ্রহে ছিল কয়েক হাজার দুর্লভ লোকগান।

মুস্তাফা জামান আব্বাসী দীর্ঘদিন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও শিল্পগোষ্ঠীর মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্বের ২৫টি দেশে ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, চটকা, বিচ্ছেদি, নজরুলসংগীত পরিবেশন করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় আন্তর্জাতিক লোকসংগীত সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে।

একাধারে লেখক, গবেষক, কবি ও সংগীতজ্ঞ মুস্তাফা জামান আব্বাসীর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ২১টি। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-কে নিবেদিত ‘মুহাম্মদের না’। ইউনেস্কোর ছত্রচ্ছায়ায় ১১ বছর তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিটি অব মিউজিকের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এবং একাধিকবার আন্তর্জাতিক সংগীত সম্মেলনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

জীবদ্দশায় নানা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি, যার মধ্যে অন্যতম একুশে পদক।

তার মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *